• Home
  • ভ্রমণ
10

নিঝুম দ্বীপ -সাইকেল সহ ব্যাকপ্যাক অভিজ্ঞতা

নোয়াখালী জেলার সর্ব দক্ষিণের দ্বীপ হল হাতিয়া। হাতিয়া থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন আরেকটি দ্বীপ হলো নিঝুম দ্বীপ। একে ‘দ্বীপ’ বলা হলেও মূলত এটি হল চর। বঙ্গোপসাগর ও মেঘনার নদীর মোহনায় গড়ে ওঠা নিঝুম দ্বীপ প্রাণী ও উদ্ভিদ সম্পদের বিশাল ভাণ্ডার। প্রাকৃতিক পরিবেশে পশু-পাখির জন্য দেশের একমাত্র অভয়ারণ্য এ দ্বীপটি।

নিঝুম দ্বীপ এর ইতিহাস
নিঝুম দ্বীপ ভ্রমণ
দরকারী টিপস
খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা আর খরচ?
ক্যাম্পিং সুবিধা
কীভাবে যাবেন নিঝুম দ্বীপ

 

নিঝুম দ্বীপ এর ইতিহাস


নিঝুম দ্বীপের উত্পত্তির ইতিহাস বেশ চমত্কার। যতদূর জানা যায়, প্রায় একশ’ বছরেরও বেশি সময় আগে গভীর রাতে মাছ ধরতে গিয়ে জেলেরা এই একটি ডুবো চরের সন্ধান পান । গভীর রাতে বঙ্গোপসাগর আর প্রমত্ত মেঘনার মোহনায় হঠাৎ সাগরের উথাল-পাতাল ঢেউ দেখে প্রথমে জেলেরা ভাবেন—হয়তো সাগর মোহনা দিয়ে বিশাল সব তিমির বিশাল ঝাঁক পথ হারিয়ে এদিক সেদিক ছোটাছুটি করছে। উথাল পাথাল ঢেউ এর তাণ্ডব দীর্ঘস্থায়ী হওয়ায় দুঃসাহসী জেলেরা রাতেই সেদিকে এগিয়ে যায় এবং বিশাল এক ডুবোচরের সন্ধান পান। সেই ডুবোচরই আস্তে আস্তে পলি জমে একটি দ্বিপের আকার ধারন করে । যা আজকের নিঝুম দ্বীপ ।

কিছুদিন পর স্থানীয় জেলেরা পাখির আনাগোনা দেখে মাছ ধরতে এই এলাকায় যাওয়া-আসা শুরু করেন। বালুয়ার চর নামে এই দ্বীপটি জেলেদের কাছে পরিচিতি লাভ করে। পরবর্তীতে নিঝুম দ্বীপের বালুর রঙ স্বর্ণের রঙের মতো হওয়ায় কিছুদিন পর এর নামকরণ করা হয় স্বর্ণদ্বীপ। তখন ওসমান নামের একজন বাথানিয়া তার মহিষের বাথান নিয়ে প্রথম নিঝুম দ্বীপে বসবাস শুরু করেন । এ কারনে তার নামেই এই দ্বীপটির নামকরণ করা হয় চর ওসমান ।

এরপর হাতিয়ার একজন সাংসদ এই দ্বীপটির নাম বদলে নাম রাখেন নিঝুম দ্বীপ । ১৯৭০ সালের আগে পর্যন্ত এখানে লোকজনের বসবাস ছিলো না। ১৯৭০ সালে বনবিভাগ এই দ্বীপে তাদের কার্যক্রম শুরু করে চার জোড়া হরিণ অবমুক্ত করণের মাধ্যমে। পরবর্তীতে ১৯৯৬ সালে এক হরিণশুমারীতে পাওয়া তথ্যে জানা যায় সেই ১৯৭০-১৯৯৬ এই ২৬ বছরে হরিণের সংখ্যা বেড়ে দাড়িয়েছে ২২,০০০ এ। সেই থেকে এই দ্বীপটিকে হরিণের অভয়ারণ্য হিসেবে ঘোষণা করা হয়। বর্তমানেও অসংখ্য হরিণ রয়েছে দ্বীপটিতে।

নিঝুম দ্বীপ

নিঝুম দ্বীপ

অন্য আরেকটি সূত্র হতে জানা যায়, ১৯৪০- এর দ্বীপটি বঙ্গোপসাগর হতে জেগে ওঠা শুরু করে। চর গঠনের বিভিন্ন ধাপ অতিক্রম করে ৪০-এর দশকের শেষদিকে নিঝুম দ্বীপ তৃণচর বা গোচারণের উপযুক্ত হয়ে ওঠে। হাতিয়ার জেলেরা মাছ ধরতে গিয়ে এই দ্বীপের সন্ধান পায়। ৫০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে নিঝুম দ্বীপে জনবসতি শুরু হয় বলে ধারনা করা হয় । মূলত হাতিয়ার জাহাজমারা ইউনিয়ন থেকে কিছু জেলে পরিবার প্রথম নিঝুম দ্বীপে বসবাসের জন্যে আসেন । তখন নিঝুম দ্বীপ সংলগ্ন এলাকায় প্রচুর ইছা মাছ (চিংড়ি মাছ) ধরা পড়ত বিধায় জেলেরা এ দ্বীপের নাম দেয় ‘ইছামতির দ্বীপ’।

আবার এ দ্বীপটিতে মাঝে মাঝে বালির ঢিবি বা টিলার মতো ছিল বিধায় স্থানীয় লোকজন এ দ্বীপকে বাইল্যার ডেইল বলেও ডাকত। কালক্রমে ইছামতি দ্বীপ নামটি হারিয়ে গেলেও স্থানীয় লোকেরা এখনো এ দ্বীপকে বাইল্যার ডেইল বলেই সম্বোধন করে।
১৯৬৯ সালের দিকে একদল জরিপকারী এই চরে জরিপ করতে আসেন। তখন ওসমান নামের স্থানীয় এক বাসিন্দা জরিপকারীদের সহযোগিতা করেন। জরিপকারী দলটি চর ওসমান নামে এই চরের নামকরণ করেন ।

কালের পরিক্রমায় সমুদ্রের পানিতে বিভিন্ন প্রজাতির বৃক্ষরাজির বীজ ভেসে আসায় দ্বীপটিতে গড়ে ওঠে এক বিশাল প্রাকৃতিক বনাঞ্চল । চলে এই দ্বীপজুড়ে নেমে আসে গভীর নির্জনতা । পরে লোকের মুখে মুখে নির্জন দ্বীপ নামে আত্মপ্রকাশ করে । ১৯৭৯ সালে তত্কালীন প্রয়াত সংসদ সদস্য প্রতিমন্ত্রী আমিরুল ইসলাম পরিদর্শনে এসে নির্জন দ্বীপের শান্ত ও মনোমুগ্ধকর পরিবেশ দেখে মুগ্ধ হয়ে দ্বীপটির নামকরণ করেন নিঝুম দ্বীপ।

নিঝুম দ্বীপ ভ্রমণ


নিঝুম দ্বীপে যাবার এই ট্যুর প্ল্যানটা গোপন ট্রাভেলার্স অনেক আগে থেকে করে রাখে। ট্যুরের নামকরণ করা হয় “নিঝুম দ্বীপ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন অভিযান” । আমিও কনফার্ম করে দেই। কিন্ত একবার মাঝে ক্যাম্পাসের ট্যুর থাকায় কেন্সেল করে দিয়ে আবার পুনরায় ট্যুরে যাবার ইচ্ছা পোষণ করি। ব্যাক-প্যাক ট্যুরের মজাই অবশ্য আলাদা । এর আগে গোপন ট্রাভেলার্স এর সিজন-৪ ও গিয়েছিলাম।

এবার আমাদের ট্যুরের সদস্য সংখ্যা ৩২ জন। মোটামোটি বেশ বড় একটা টিম। ১৬ তারিখ লঞ্চে যাবার প্ল্যান করা হয় ফলে ৩২ জন + ৩২ টা সাইকেল বিশাল একটা জায়গা দরকার পড়বে তাই ১১ টায় একটা টিম নিয়ে মুসা, রাহাদ, সাদনান বেরিয়ে পড়লো লঞ্চের ডেকে জায়গা দখলের জন্য। বেলা ১ টার দিকে ওরা এম ভি ফারহান-৪ এ পৌঁছে । দড়ি বেধে দুই তলার সামনের পুরো জায়গাটা দখলে নিয়ে নিলো আমাদের ৩২ জন অভিযাত্রির জন্য। আমি পৌঁছাই ১ টা ৪০ এ। একে একে সবাই আসতে শুরু করলো। সাড়ে চারটার দিকে মোটামোটি সবাই পৌঁছে যায়।

লঞ্চ ৫.৩০ এ সদরঘাট ত্যাগ করলো। লঞ্চ ছাড়ার সময়ে সবাই জোড়ে চিৎকার করে যাত্রাকে স্বাগত জানাল । চার পাশের মানুষ জন আমাদের আগ্রহ ভরে দেখছিল।এদিকে সবাই চাদর বিছিয়ে আড্ডাবাজি আর ফটোসেশনে মেতে উঠলো। কেউ বা বসে গেলো কার্ড নিয়ে আমি নিজেও এই দলে। 😛 আবার কেউ লুডু নিয়ে বসে পড়ে। সব মিলিয়ে বেশ উত্তেজনা কাজ করছিলো সবার ভিতরেই। রাতের খাবার আমরা লঞ্চেই খেয়ে নিলাম। আমি একটু তাড়াতাড়ি খেয়ে নেই। কারন দেখা যায় না হলে খাবারের স্বল্পতা দেখা যায় আবার খাবার ঠান্ডা হয়ে পড়ে।

রাত ১১ টা নাগাদ আমরা গানে গানে মেতে উঠি। প্রায় সারারাত ধরেই চলে আমাদের এই আড্ডাবাজি।একটু পর পর লঞ্চের অন্যান্য যাত্রিরা এসে আমাদের মজা উপভোগ করছে এবং তাদের নানা প্রশ্নের জবাব দিতে হচ্ছিল। রাত গভীর হয় আর আকাশের একফালি চাঁদ আমাদের স্বাগত জানায়। চারদিকে রূপালী আলোর বন্যা। রাত বাড়ার সাথে সাথে ধীরে ধীরে আমরা নিস্তেজ হয়ে পড়ি। ডেকে শীত নেমে আসে। সবাই বিছানা , কম্বল আর কাথা নিয়ে কাড়াকাড়ি শুরু করে। শেষ রাতের দিকে আমরা ঘুমের কাছে পরাস্ত হয়ে পড়ি।

ঘুমে ব্যস্ত

ঘুমে ব্যস্ত

সাড়ে ছয়টার কাছাকাছি সময়ে লঞ্চ মনপুরা দ্বীপে নোঙ্গর ফেলে। মেহেনদিগঞ্জ,দৌলতখা, মনপুরা হয়ে প্রায় সকাল ০৭:৩০ এর দিকে তমূরদ্দি ঘাট এসে ফারহান-৪ যাত্রা শেষ করে । লঞ্চ ঘাটে নামতেই উৎসুক জনতার ভীড় লেগে যায়। বাদলকে পাঠানো হয় নাস্তা করার জন্যে উপযক্ত খাবারের দোকান খুঁজতে। ওরা ফিরলে উৎসুক জনতার ভীড় ঠেলে ঠেলে বাজারে গিয়ে সবাই নাস্তা করলাম। আপনি যদি আয়েশি আর জামজমকপূর্ণ খাবারের প্রত্যাশা করেন তাহলে হতাশই হতে হবে।

বাজারে দুইটা খাবারের দোকান। মান খুব একটা ভাল না। এর পরেও পেট পুজো তো করতেই হবে। এর পরে শুরু করলাম প্যাডেলিং যেতে হবে পিচ ঢালা পথ ধরে মুক্তারিয়া ঘাট এর দিকে যা প্রায় ২৭-২৮ কিলো দক্ষিণে। পথের দুই পাশে সারি সারি গাছ, ফসলের মাঠ, মাঠে গরু, মহিষের বিচরণ, তারই মাঝে ছুটে চলছে ৩২ জন অভিযাত্রির সাইকেল।

জামিল ভাই, অথৈ আর সানোয়ার ভাই মেইন রোড ধরে চলে গেলো সবার আগে বিচ্ছিন্ন হয়ে উছখালি বাজারে। যদিও বলে মিষ্টি আনার জন্যে গেছিল । পুরাই চাপা । আসলে ভুলে চলে যায়। 😛  আর বাকি সবাই উত্তর সোনাদিয়া স্কুলের পাশে বসে বিশ্রাম নিলাম প্রায় ঘন্টাখানেক ।ক্যাপসুল হ্যামক টানিয়ে ফেলে সবাই ছবি তুলে । আশে পাশে ঘুরে বেড়াচ্ছিল। ঐ দিন স্কুল বন্ধ ছিল . শেষমেষ উনাদের দেড়ি দেখে আবার রওয়ানা হলাম উনাদের রেখেই। গন্তব্য মুক্তারিয়া ঘাট। জাহাজমারা পার হতেই শুরু হয়ে গেলো ভাঙ্গা চুড়া অফ রোড । ফলে স্পষ্টতই ক্লান্তির ছাপ ফুটে উঠলো সবার চেহারায়। প্রায় ১২ টার দিকে সবাই মুক্তারিয়া ঘাটে এসে পৌছালাম।

নদী পার হতে হতে আমাদের প্রায় ১ ঘন্টা লেগে গেল। নদীর ওপারে বন্দরটিলা ঘাট । এখানে লোকজনের এত আধিক্য নেই। বন্দরটিলা থেকে সোজা পথ টি চলে গিয়েছে নিঝুম দ্বিপের নামার বাজার পর্যন্ত। বন্দরটিলা হতে নামাবাজার পর্যন্ত প্রায় ১২ কিলোমিটারের মত রাস্তা । এই ১২ কিলোমিটার রাস্তা সবার কাছে জোস লাগে। সাইকেলের চাকা বাম্প করছিল না একদমই। চার পাশের পরিবেশ দেখে চোখ জুড়িয়ে যায়।

হোটেলে আগে থেকেই খাবারের অর্ডার দেওয়া ছিলো। প্রচন্ড গরমে সবাই হাসফাস করছিল। বিদ্যুৎ নেই । দিনের বেলা বিদ্যুৎ থাকে না। রাতে সোলার দেওয়া হয়। ফ্রেশ হয়ে সবাই খেতে বসে গেলাম আলতাফ সাহেবের হোটেলে। সে সে বেলার ম্যানু খিচুড়ি, ডিম, ডাল, শুঁটকি ছিলো সবাই এত ক্ষুধার্থ ছিল যে একটু বেশিই খায় সবাই। খাবার শেষে খানিকক্ষণ বিশ্রামের পর জেলা পরিষদ বাংলোর পাশের পুকুরে সবাই গোসলে নেমে গেলাম। এর পরে সবাই চলে যাই নিঝুম বিচের দিকে।

তাবু পীচ করার জন্যে অনেকগুলো জায়গা দেখা হয়। বাদল আর তন্ময় চলে যায় এক দিকে আর আমি আর শশী ভাই যাই এক দিকে। এর পর চৌধুরি খালের পাশেই তাবু পীচ করার সিদ্ধান্ত হয়। সুর্য তখন পশ্চিম দিগন্ত ঘুমে ঢুলু ঢুলু অবস্থায় বিদায় জানাতে ব্যস্ত। এবার তাবু পীচের পালা । তাবু পীচের পাশাপাশি ক্লিক ক্লিক শব্দে ছবি উঠানো হচ্ছিল। ক্লান্তিকর সন্ধ্যা নেমে এল। রাতের আধার স্বাগত জানানোর আগেই আকাশে উঁকি দিলো এক ফালি রূপালি চাঁদ, একরাশ জোস্নার কিরণ দিয়ে ভালোবাসার প্রমাণ দিলো ক্যাম্প গ্রাউন্ডে। ক্যাম্প গ্রাউন্ডের মাঝে বিশাল এক পলিথিন বিছিয়ে সবার বসার আয়োজন করা হল। ক্লান্তিতে কেউ কে শুয়ে পড়ে।

আশেপাশের কিছু লোকের সহায়তায় লাকড়ি যোগাড় করা হয়। কয়েকজন গিয়ে নাস্তা নিয়ে এলো। ক্যাম্প এরিয়া থেকে বাজার প্রায় দেড় কিলোমিটারের উপরে। বালি দিয়ে হেটে গিয়ে নাস্তা আনতে আনতে রাতের খাবারের সময় হয়ে গেলো। এর মাঝে কিছুটা সিকনেস এর কারণে ফাহাদ ভাই আর তাবু বাসে না এসে হোটেলে একটা রুমে উঠলো। ৯ টার দিকে আমি সহ টিমের অর্ধেক লোক গিয়ে খাবার খেয়ে ফিরে আসলাম , পরে বাকিরা গিয়ে রাতের খাবার খেলাম।রাতের খাবার খেয়ে এতদুর হেটে আসতে আসতে মোটামুটি সবার ই ক্ষুধা লেগে গেলো। কিছুক্ষন পর সন্ধ্যায় আনা নাস্তা খেয়ে সবাই আড্ডায় বসে গেলাম। ক্যাম্প ফায়ারের ব্যবস্থা করলাম ইতিমধ্যে । রাতের আধারে তাবুতে বাতি জ্বালিয়ে তুলে নিলাম কিছু স্মৃতিতে রেখে দেওয়ার ছবি।

নিঝুম দ্বিপে ক্যাম্প ফায়ার

ক্যাম্প ফায়ার

FMD_0328

রাতের তাবু

রাত গভীর থেকে গভীরতর হচ্ছে, পাখিরা ঘুমে আচ্ছন্ন, বনের হরিণ সহ চার পাশের প্রানীগুলো নিদ্রার দেশে অথচ আমাদের কারো চোখে নাই ঘুম। অদ্ভুত এক আড্ডার নেশায় জেগে আছে সবাই। চাঁদের আলোতে চার পাশ ভেসে যাচ্ছিল। চাঁদের আলো পেলেই আমার অতীতের কিছু স্মৃতি এসে মন খারাপ করে দেয়। প্রচন্ড কুয়াশায় সব কিছু ভীজে যাবার উপক্রম। হইহল্লা করে আমি যখন তাবুতে প্রবেশ করি তখন দুইটার কাছাকাছি। গিয়ে দেখি তাবুর জানালা একটু খোলা ছিল বলে তাবু ভীজে একাকার । ভাগ্যিস টিস্যু পেপার নিয়েছিলাম । পানি মুছে শুয়ে পড়ি স্বপ্নের জাল বোনার জন্যে।

সকালে সাড়ে ছয়টা নায়িম ভাই এর কলকাকলিতে নিঝুম দ্বীপ মূখর হয়ে উঠে। উঠে পড়ি চৌধুরির খাল পাড় হয়ে বনে গিয়ে হরিণ দেখার উদ্দেশ্যে । আমি , নায়িম ভাই, সাকিব ভাই, বাদল দা আর কারিম হেটে চলে যাই খালের পাড়ে । গিয়ে দেখি কাদাময় খালের পাড় একটা নৌকা দেখা যাচ্ছে কাদা মাড়াতে হবে বলে কেউ যেতে রাজি হয় নি। আমার সাথে সাকিব আর করিম যেতে রাজি হয়। হাটু সমান কাদা ভেঙ্গে নৌকা নিয়া ওপারে গিয়ে ৩০-৪০ মিনিট হরিনের খুঁজে বন চষে বেড়াই। লাভের লাভ শুণ্য। কি আর করা ফেরত আসি ।

শ্বাসমূল

শ্বাসমূল

রোদের সাথে পাল্লা দিয়ে তাপমাত্রা বাড়তে থাকে। সবাই সকাল বেলার ফটোশেসন সেড়ে তাবু গোছানোতে লেগে যায়। তাবু গুছিয়ে ক্যাম্প সাইট পরিষ্কারে নেমে পড়ে সবাই। এই ইভেন্ট এর মূল লক্ষ ছিলো নিঝুম দ্বিপ পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার। খুব বেশি টুরিস্ট না থাকায় পুরো বিচ দেখলাম একদম পরিষ্কার। শেষমেষ আমাদের বাড়তি নোংরা জিনিসগুলোই আমরা কুঁড়িয়ে ইভেন্টের পূর্ণতা আনি। তবে কতদিন এরকম থাকে সেটা বলা মুশকিল।

 

সকাল ৯ টার দিকে সবাই বাজারে গিয়ে আলতাফ সাহেবের হোটেলে নাস্তা সেরে নিলাম। সবাই মিলে সিদ্ধান্ত হয় আজকের ক্যাম্প করা হবে নাইট রাইড করে বন্দরটিলা ঘাটে গিয়ে । তাবু গুছিয়ে নাস্তা করতে সময় লাগে বলে যেন পরদিন ভোরেই নদী পাড়ি দিয়ে লঞ্চ ছাড়ার আগেই লঞ্চ ঘাটে পৌঁছাতে পারি।

নাস্তা সেরে নিঝুম রিসোর্টে সব ব্যাগ আর সাইকেল রেখে, সবাই মিলে পায়ে হেটে রওয়ানা দিলাম চৌধুরি খালের পুর্ব দিকের ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট এর দিকে। এর পূর্বে দুইটা খাসি কেনা হয়েছে রাতে বার বি কিউ করার জন্য। সাথে স্থানীয় দুইটা ছোট ছেলে গাইডের কাজ করেছে। যেহেতু আমরা সংখ্যায় বেশি তাই বেশ কিছু গ্রুপ করে বিভিন্ন দিক দিয়ে বনের গহীনে প্রবেশ করলাম হরিণ দেখার তৃষ্ণা মেটাতে। । সামনে এগিয়ে যাচ্ছি আর হরিণের সদ্য পায়ের ছাপ দেখে যেন আমরা শিহরিত।

মনে হচ্ছিল এই বুঝে সামনে দিয়ে দৌড়ে গেল। আমরা পা টিপে টিপে হাটছিলাম। কারন হরিনের কান সাংঘাতিক রকমের প্রখর । ৩০ মিনিট হাটার পরেও দেখা মিলছিল না হরিনের। ক্রমেই হতাশ হয়ে পড়ছিলাম। মনে মধ্যে জেদ চাপে আজ দেখেই যাব। পকেটে একটা টোষ্টের প্যাকেট ছিল সাথে গাইডেড় কাছে ছিল এক বোতল পানি। সাথে ছিল রবিন রাহাদ, আর ফাহিম। গহীণে প্রবেশ করছি আর ভাবছি আমার ফেরত আসতে পারব তো ?

হটাত দেখি দূরে একটা হরিণ দেখা যাচ্ছে। আস্তে ধীরে পা টিপে টিপে এগিয়ে যেতে যেতে আরো গহীণে চলে যায়। ৩০-৪০ মিনিট ওদের পিছনে ঘুরাফেরা করি ছবি তোলার জন্যে। আশাহত হতে হয়। ওহ প্রথেমে শিয়াল দেখেই রাহাত চিল্লাই উঠে। সবচেয়ে ভালভাবে হরিণ দেখার জন্যে নাজমুল ভাই, শশী ভাই, রেজোয়ান ভাইরা সেই বিকালে ফিরে আসে। তারা খুব ভালো একটি ভিডিও ও করে নিলো।

হরিণ

হরিণ

প্রায় ৩ টার দিকে সবাই ফিরে এলাম নিঝুম রিসোর্টের মাঠে। ফ্রেশ হয়ে রাক্ষসের মত দুপুরের খাবার খেয়ে নিলাম হোটেলে। দুপুরের খাবার শেষ করার আবার সবাই মাঠে জমা হই। স্থানীয় কিছু ছেলে পেলে ফুটবল নিয়ে এসেছে খেলতে। আমরা ওদের সাথে খেলতে চলে গেলাম। খেলা শেষে খাসির খামি বানাতে লেগে গেলো নায়িম, বাদল আর মুসা।

পায়েশ রান্না করার জন্যে আমি আর ফাহিম চলে যাই হোটেলে । এত গরম লাগছিল চুলাতে ভাষায় প্রকাশ করার মত না। দুধ নাড়তে গিয়ে হাতের সব লোম পুড়িয়ে ফেলি। কয়লার অভাবে সন্ধ্যার পর লাকড়ি পুড়ে কয়লা বানিয়ে সেই কয়লায় করা হলো খাসির বার বি কিউ ।প্রায় ৪ ঘন্টার কাঠ, কয়লার পোড়ানোর পরে পেলাম সেই কাঙ্ক্ষিত বার বি কিউ। সাথে ছিলো রুটি ও লুচি।

ক্ষিদায় সবার পেট চু চু করছে। পলিথিন বিছিয়ে সবাই বসে পড়ে । খাবার দেওয়া নিয়ে একটু ঝামেলা হবে বলে লাইনে দাড়াতে বলা হয় সবাইকে। এক দৌড়ে সবাই লাইনে দাঁড়িয়ে পড়ে । উমা দেখি সবার আগে আপনার ছবি মুছে ফেলা হবে হিসেবে ক্ষ্যাত হাসান ভাই।

যার যার প্লেট নিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে বার বি কিউ, রুটি, লুচি আর খাবার শেষে আয়েশ করে পায়েশ খেয়ে নিলাম। ১৫-২০ মিনিট বিশ্রামের পর রাত ১২ টার দিকে সবাই রেডি হলাম নিঝুম দ্বিপ কে বিদায় জানাতে আর নাইট রাইডের জন্য। মাত্র ২০-২৫ মিনিটের নাইট রাইডে চলে এলাম প্রায় ১২ কিলোমিটার পথ। সিঙ্গেল লাইনে সাইকেলগুলো যখন হেড লাইট জ্বালিয়ে যাচ্ছিল দেখতে অসাধারণ লাগছিল । দু একজন শুধু তাবু পিচ করলো বাকিরা বড় পলির উপর গা এলিয়ে ঘুমের রাজ্যে পাড়ি জমালো। আমিও পলিথিনের উপর ঘুমিয়ে পড়ি।

 

পর দিন সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে ঘুম থেকে উঠি। ফ্রেস হওয়া নিয়ে সেকি সিরিয়াল। 😛 সকাল ৭ টার দিকে নদী পাড়ি দিয়ে চলে এলাম মুক্তারিয়া ঘাট। সেখান থেকে সাইকেলে করে তমূরদ্দি লঞ্চঘাট । পথে বিশ্রাম নিয়েছিলাম সেই উত্তর সোনাদিয়া স্কুলে । আজ স্কুল খোলা আমরা ফটোগ্রাফিতে ব্যস্ত হই। স্কুলের বাচ্চাদের সাথে খুব ভালো কিছু সময় কাটলো আমাদের। আমাদের দানবির খ্যাত মুসা ভাই সকল বাচ্চাদের আইসক্রিম খাওয়ালো। আমরা সবাই ক্লাশে ঢুকে ছোট বেলার স্মৃতিচারণের চেষ্টা করলাম।

স্কুলের ছেলে মেয়েরা

স্কুলের ছেলে মেয়েরা

অবশেষে ১২ টার দিকে তমরদ্দি ঘাট এসে সবাই নাস্তা করে লঞ্চে উঠে পড়লাম। এইদিন হাতিয়া থেকে প্রায় ২৫০০ বস্তা মাল উঠানো হলো লঞ্চে যার কারণে লঞ্চ একটু দেরিতে ছাড়লো।সন্ধ্যার পর পরই শুরু হয় বৃষ্টি। একটু ভয় কাজ করে মনে । ডেক ছেড়ে চলে যেতে হয় ভীতরে। প্রচন্ড শীত লাগে। ব্যাগ খুলে এবার ফুল হাতা গেঞ্জি গায়ে দেই। চিল্লা চিল্লি করতে করতে বেজে যায় ২ টা । এবার ঘুমিয়ে পড়ি সবাই লাইন দিয়ে। মুন্সিগঞ্জে ৩ টায় এসে মাল আনলোড করতে করতে বেজে যায় সাড়ে ছয়টার মত। সদরঘাটে লঞ্চে পৌছে সাড়ে সাতটার কাছাকাছি সময়ে।
পুরু ট্যুরের ছবি দেখতে চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দরকারী টিপস


শুধুমাত্র রবি এবং গ্রামীনফোন এর নেটওয়ার্ক পাবেন। আমি কাউকে জিজ্ঞেস করি নাই তাই বোকার মত ধরা খেয়েছিলাম আমার ফোনে নেটওয়ার্ক ছিল না। তাই যাবার আগে এই দিকে খেয়াল রাখা উচিত । বিদ্যুতের ঘাটতি আছে দ্বীপে শুধুমাত্র রাতে বাজারে সোলারে চার্জ দিতে পারবেন। তাই পাওয়ার ব্যাংক নেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ হবে।

নিঝুম দ্বীপে খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা আর খরচ?


মোটর সাইকেল ওয়ালারা নিঝুম দ্বীপে নামার সাথে সাথে ঘিরে ধরে , ভুলেও এদের নিয়ে কোন হোটেলে যাওয়া উচিত না।

১. নিঝুম রিসোর্ট (অবকাশ হোটেল) নামার বাজারঃ অবকাশ পর্যটন লিমিটেড এর একটা রিসোর্ট হল নিঝুম রিসোর্ট যা নামার বাজার সী বীচ এর কাছে অবস্থিত। নিঝুম রিসোর্ট থাকার জন্য একটি ভালো মানের রিসোর্ট।

ভাড়াঃ ২ বেড এর VIP রুমের ভাড়া ২০০০ টাকা , ২ বেড এর Executive রুমের ভাড়া ১৫০০ টাকা, ৩ বেড এর Executive রুম ভাড়া ১৮০০ টাকা, ৪ বেডের Executive রুম ভাড়া ২০০০ টাকা, আর ৫ বেড এর ফ্যামিলি রুমের ভাড়া হল ৩০০০ টাকা এবং ৫ বেড এর ডরমেটরি রুম ভাড়া ১৮০০ টাকা ও ১২ বেড এর ডরমেটরি রুম ভাড়া ৩০০০ টাকা।
ডরমেটরি রুমে অতিরিক্ত প্রতি জন থাকলে ২০০ টাকা করে দিতে হবে। প্রতিটিতে এটাচ ওয়াশরুম আছে।
দুপুর ১২ টার আগে চেক আউট করতে হবে।
অফ সিজনে রুম ভাড়ায় ৫০% ডিসকাউন্ট পাওয়া যায় ( এপ্রিল ১৫- সেপ্টেম্বর ৩০ )।

যোগাযোগঃ ঢাকা অফিসঃ অবকাশ পর্যটন লি., আলহাজ সামসুদ্দিন ম্যানসন (নবম তলা), ১৭ নিউ ইস্কাটন রোড, ঢাকা। ফোন : ৮৩৫৮৪৮৫, ৯৩৪২৩৫১, ৯৩৫৯২৩০, ০১৫৫২৩৭২২৬৯।

নিঝুম দ্বীপ অফিসঃ সবুজঃ ০১৭২৪-১৪৫৮৬৪, ০১৮৪৫৫৫৮৮৯৯ , ০১৭৩৮২৩০৬৫৫
২. মসজিদ বোর্ডিং, নামার বাজারঃ এটা থাকার ব্যবস্থার মধ্যে সবচেয়ে সস্তা । স্থানীয় মসজিদ থেকে এই ব্যবস্থা করেছে, দুইটা সিঙ্গেল এবং দুইটা ডবল রুম আছে, আর সব ডরমেটরি । ডরমেটরি – ভাড়া ২০০ – ৩০০ টাকার মত । এই বোর্ডিং-এ কোনো এটাচ বাথরুম এবং জেনারটরের ব্যবস্থা নাই। ২টি কমন বাথরুম এবং একটি টিউবওয়েল আছে।

৩. হোটেল শাহিন, নামার বাজারঃ এই হোটেলটি নতুন। ১০০০ টাকার রুমের ভাড়া ২৫০০ টাকা চাবে। যাই হোক ফোন নম্বরঃ ০১৮৬৩১৫০৮৮১

এই বোর্ডিং-এ থাকার জন্য বুকিং করতে যোগাযোগঃ মোঃ আব্দুল হামিদ জসিম, কেন্দ্রিয় জামে মসজিদ, নামার বাজার, হাতিয়া, নোয়াখালী। ফোনঃ ০১৭২৭-৯৫৮৮৭৯।
৪. হোটেল দ্বীপ সম্পদ নামার বাজারঃ ফোনঃ ০১৭২০ ৬০১ ০২৬, ০১৭৬০ ০০৮১০৬। (সৈয়দ চাচার থাকা এবং খাওয়ার হোটেল)

৫. নিঝুম ড্রিম ল্যান্ড রিসোর্ট, বন্দরটিলাঃ নতুন খোলা এই রিসোর্টের পরিবেশ ভালোই।
যোগাযোগঃ ঢাকা বুকিং অফিসঃ০১৮৪৭১২৩৫৭৩ নিঝুমদ্বীপ বুকিং অফিসঃ০১৮৪৭১২৩৫৭২

৬. জেলা প্রশাসন ডাক বাংলো।

ক্যাম্পিং সুবিধা


ক্যাম্পিং হতে পারে খুব মজার একটা আইডিয়া। আপনাকে ক্যাম্পিং এর জন্যে স্থান নির্বাচনে তেমন চিন্তা ভাবনা করতে হবে। পুরো দ্বীপেই প্রায় সব জায়গায় আপনি ক্যাম্পিং করতে পারেন চাইলে। যতটুকু জানি নিরাপদই দ্বীপে ক্যাম্পিং করা স্থানীয়দের সাথে কথা বলে তাই মনে হয়েছে।

কীভাবে যাবেন নিঝুম দ্বীপ


যদি বাসে যেতে চান

ঢাকার মহাখালী, কমলাপুর ও সায়েদাবাদ থেকে এশিয়া লাইন, এশিয়া ক্লাসিক, একুশে এক্সপ্রেস ও হিমাচল এক্সপ্রেসের চলাচল করে নোয়াখালীর সোনাপুর রুটে। ভাড়া পড়বে ৩৫০-৪৫০ টাকার মধ্যে।
বাসে সোনাপুর নেমে সিএনজি অটোরিকশায় করে চলে যান চেয়ারম্যান ঘাট। ভাড়া গুনতে হবে ১০০ টাকা।
এরপর ট্রলারে চড়ে যেতে হবে নলচিরা ঘাটে। জনপ্রতি ভাড়া ১৫০ টাকা। সেখান থেকে আবারও বাসে জাহাজমারা বাজার। জনপ্রতি ভাড়া দিতে হবে ৭০টাকা।
জাহাজমারা বাজার থেকে মোটর সাইকেলে মুক্তারিয়া ঘাট। ভাড়া পড়বে ৭০টাকা করে। সেখান থেকে ইঞ্জিন চালিত নৌকায় নিঝুম দ্বীপ ঘাট। ভাড়া জনপ্রতি ১০টাকা।
এরপর আবারও ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেলে করে যেতে হবে নামার বাজারে (নিঝুম দ্বীপ)। সেজন্য আপনাকে ভাড়া দিতে হবে ৬০ টাকা।

লঞ্চে যেতে চাইলে

লঞ্চে যেতে চাইলে ঢাকা থেকে হাতিয়ায় যাওয়ার জন্য প্রতিদিন ১ টা লঞ্চ বরাদ্দ রয়েছে একটার নাম “এম.ভি ফারহান – ৩” অন্যটা “এম.ভি ফারহান – ৪”। দুইটা লঞ্চ রোটেশন পদ্ধতিতে ডেইলি ১ টা করে ছেড়ে যায়, প্রতিদিন বিকাল ৫.৩০ মিনিটে লঞ্চ সদরঘাট ছেড়ে যায়, লঞ্চ ১ মিনিট ও লেট করে না, আপনি দেরি করলেও কিন্ত লঞ্চ দেরি করে না তাই সাবধান।

হাতিয়ার উদ্দেশ্যে সদরঘাট থেকে বিকেল সাড়ে ৫ টায় ছেড়ে যাওয়া লঞ্চ কালিগঞ্জ (মেহেন্দীগঞ্জ) – বিশ্বরোড (ভোলা) – দৌলত খাঁ (ভোলা) – মির্জাকালু – শরাশগঞ্জ – ভোলা তজুমুদ্দিন – মনপুরা (রামনেওয়াজ লঞ্চ ঘাট) হয়ে হাতিয়ার তমুরদ্দী ঘাটে সাধারণত পৌঁছায় পরদিন সকাল সাড়ে সাতটা থেকে নয়টার মধ্যে। নিঝুম দ্বীপ এ যেতে হলে নামতে হবে লাস্ট ঘাট হাতিয়ার তমুরদ্দী । আবার ঢাকায় ফেরত যাবার লঞ্চ ছাড়ে দুপুর সাড়ে ১২ টায়।

যোগাযোগঃ- এম.ভি ফারহান ৩- ০১৭৮৫৬৩০৩৬৬। এম.ভি ফারহান ৪- ০১৭৮৫৬৩০৩৬৮, ০১৭৮৫৬৩০৩৬৯, ০১৭৮৫৬৩০৩৭০।

ভাড়াঃ ডেকে ৩৫০ টাকা, আবার ২৫০ টাকা দিয়াও যাওয়া যায়। কেবিন সিঙ্গেল- ১২০০ টাকা, ডাবল কেবিন -২২০০ টাকা, ভিআইপি কেবিন -৩৫০০-৪০০০ টাকা।

তমুরদ্দী ঘাটে নেমে বেবি টেক্সিতে (৫০০-৬০০ টাকা) সরাসরি মোক্তারিয়া ঘাটে যেতে পারেন আবার সরাসরি মোটর সাইকেলযোগেও মোক্তারিয়া ঘাট এ যাওয়া যায় সে ক্ষেত্রে ভাড়া দুই জন ৩০০ – ৩৫০ টাকা, দর দাম করে নেওয়াই ভাল। সেখান থেকে ট্রলারে ১০ মিনিট লাগবে নিঝুম দ্বীপের বন্দরটিলা ঘাটে ভাড়া জনপ্রতি ২০ টাকা করে । এরপর আপনি নামার বাজার থাকতে চাইলে ভ্যান/রিক্সা/মোটর সাইকেল এ যেতে হবে। ভাড়া দুইজন ৮০-১০০ টাকা মটরসাইকেলে ।

এছাড়া আপনি ট্রলার রিজার্ভ করে যেতে পারেন নিঝুম দ্বীপের নামার বাজার ভাড়া ট্রলার সাইজ অনুযায়ী ৩৫০০ থেকে ৫০০০ টাকার মত । সে ক্ষেত্রে অবশ্যই ভাল ট্রলার নেওয়া উত্তম মাঝ নদীতে না হলে ধুকতে ধুকতে আপনার জার্নির বারটা বাজিয়ে ছাড়বে।

মনজু
 

Click Here to Leave a Comment Below 10 comments
Sheikh Imran - March 25, 2016

This is an excellent description of a tour. The post is enriched with a to z information of Nijhoom Island tour. Thanks for posting. Carry on.

Reply
    মনজু - April 5, 2016

    thank you . 🙂

    Reply
এম,মোজাম্মেল হোসেন। - April 1, 2016

ভাল,এভাবে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন দরশনীয় স্থানের ভ্রমনের টিপস দিলে মানুষ উপকৃত হবে।

Reply
    মনজু - April 5, 2016

    চেষ্টা করব ভাইয়া। 🙂
    ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্যে।

    Reply
এম,মোজাম্মেল হোসেন। - April 1, 2016

নিঝুম দ্বীপ মনে হয় একটি সুন্দর স্থান।যেতে মনে চায়।কিন্তু যাতায়তের ঝামেলার জন্য ইচ্ছে করে না।

Reply
    মনজু - April 5, 2016

    যাতায়াতের সমস্যাকে উপভোগ করুন তাহলে ভাল লাগবে আশা করি। 🙂

    Reply
Jony Khan - February 28, 2017

বন্ধু মনজু আমি ২ বার গিয়েছি । আজ আবার যাচ্ছি ……বন্ধু দোয়া কর

Reply
নাহিয়ান - March 10, 2017

ভাই, তাবু কোথা থেকে কিন্সেন ? কত নিসে কয় জনের তাবু ছিল সেটা ? একটু বিস্তারিত বলতেন।

Reply
    মনজু - March 22, 2017

    তাবু বিক্রি করে এমন অনেকগুলো শপ আছেঃ আজিজ সুপার মার্কেটে পিক ৬৯ এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য । আর আপনি সিংগেল পারসন/ ডাবল পারসন তাবু কিনতে পারেন। দাম ৩০০০ এর আশে পাশে থেকে শুরু করে হবে । আমরা যে তাবুগুলোতে ছিলাম সেগুলো বেশিরভাগই দুইজনের তাবু।

    Reply

Leave a Reply: